শীতকালে বাত ব্যথার সমস্যা অনেকের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। ঠান্ডা আবহাওয়া ও তাপমাত্রার পরিবর্তন ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। বাত রোগে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য শীতকাল একটু বিশেষ যত্নের দাবি রাখে।
কেন শীতে বাত ব্যথা বাড়ে?
শীতকালে রক্ত সঞ্চালন ধীরগতিতে হয়, যা জয়েন্টের চারপাশের পেশি ও টিস্যুকে শক্ত করে ফেলে। এতে চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয় এবং ব্যথা অনুভূত হয়।
বাত ব্যথা কমানোর সহজ উপায়
শরীর গরম রাখুন: শীতে গরম পোশাক পরা জরুরি। হাত-মোজা, মাথায় টুপি এবং নরম জুতা পরুন যাতে শরীরের তাপমাত্রা বজায় থাকে।
গরম সেক বা প্যাক ব্যবহার করুন: ব্যথা কমাতে গরম পানির বোতল বা গরম তোয়ালে ব্যথাযুক্ত স্থানে ব্যবহার করতে পারেন। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ব্যথা কমায়।
হালকা ব্যায়াম করুন: জয়েন্ট মুভমেন্ট ভালো রাখতে এবং পেশির শক্তি ধরে রাখতে হালকা স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করুন। তবে বেশি চাপ না দিয়ে ধীরে ধীরে ব্যায়াম করুন।
পুষ্টিকর খাবার খান: বাত নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান। মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শীতে পানি কম খেলে জয়েন্টে প্রদাহ ও ব্যথা বাড়তে পারে। তাই শরীর হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
তেল মালিশ করুন: গরম সরিষার তেল বা নারকেল তেল দিয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে হালকা মালিশ করুন। এটি জয়েন্টকে শিথিল করে এবং ব্যথা কমায়।
অতিরিক্ত ঠান্ডা এড়িয়ে চলুন: ঠান্ডা বাতাসে জয়েন্ট ব্যথা বাড়তে পারে। তাই দীর্ঘ সময় ঠান্ডা পরিবেশে থাকা থেকে বিরত থাকুন।
ডাক্তারের পরামর্শ নিন: যদি ব্যথা খুব বেশি হয় বা প্রতিদিনের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ বা থেরাপি গ্রহণ করুন।
প্রতিরোধমূলক পরামর্শ
ঘরে হিটার বা রুম হিটার ব্যবহার করে ঘর গরম রাখুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে হালকা হাঁটাহাঁটি করুন। পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন করুন।
শীতকালে বাত ব্যথা বাড়লেও সঠিক যত্ন ও নিয়ম মেনে চললে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিজেকে উষ্ণ ও সক্রিয় রাখুন এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। শরীরের প্রতি যত্নশীল হলে শীতকালও হবে আরামদায়ক।