যাত্রীদের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা

মো. কামরুল ইসলাম

দেশের এভিয়েশন খাতকে সমৃদ্ধ করতে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ইউএস-বাংলা যাত্রীসেবায় শতভাগ মান বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। যাত্রীবান্ধব সেবা প্রদানের পাশাপাশি বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সেবা ও সাশ্রয়ী ভাড়ার মাধ্যমে দেশীয় যাত্রী এবং প্রবাসীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়েই এগোচ্ছে ইউএস-বাংলা।

দু’টি ৭৬ আসনের ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বহরে বর্তমানে রয়েছে ২৪টি আধুনিক এয়ারক্রাফট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৪৩৬ আসনের দুটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ এবং ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০। অভ্যন্তরীণ রুটে ব্র্যান্ড নিউ এয়ারক্রাফট ব্যবহার শুরু করা প্রথম দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে ইউএস-বাংলা ইতিমধ্যেই যাত্রীসেবায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করেছে। ভবিষ্যতে বহর সম্প্রসারণের জন্য এয়ারবাস ৩৩০ এবং বোয়িং ৭৩৭-৮০০ যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক রুটেও সুনামের সঙ্গে যাত্রী পরিবহন করছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য বিমান সংস্থা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির মধ্যে সিংহভাগই অবস্থান করেন মধ্যপ্রাচ্যে। প্রায় ২৮ লক্ষ প্রবাসী সৌদি আরবে বাস করেন, যার অর্ধেকই বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। এছাড়া, প্রায় চার ভাগের এক ভাগ প্রবাসী বাস করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

যাত্রা শুরুর পর থেকেই সিংহভাগ প্রবাসীদের সেবায় বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। মধ্যপ্রাচ্যের দোহা, মাস্কাট, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি ও জেদ্দায় নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে এই প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুবিধার্থে কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর এবং মালদ্বীপেও ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা।

দেশীয় পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ব্যাংককে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা ও চেন্নাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যগুলোতেও ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। এর যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটন, উন্নত চিকিৎসা এবং ব্যবসার উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করে থাকেন।

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি বিমান সংস্থা হিসেবে ইউএস-বাংলা চীনের গুয়াংজুতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির কঠিন সময়ে, যখন অনেক আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রেখেছিল, তখনও ইউএস-বাংলা ঢাকা-গুয়াংজু রুটে সেবা চালু রেখেছিল।

আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে ইউএস-বাংলা খুব শিগগিরই সৌদি আরবের রিয়াদ ও মদিনাসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরও নতুন রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।

২০২৬ সালের মধ্যে লন্ডন ও রোমসহ ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে টরন্টো ও নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

শুরুর দিন থেকেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দৃঢ় পরিকল্পনা এবং সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে। যাত্রী সাধারণের নিরন্তর সমর্থন ও আস্থাই এই প্রতিষ্ঠানকে ক্রমাগত নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। দেশীয় এয়ারলাইন্সের সাফল্য দেশের এভিয়েশন খাতের সামগ্রিক অগ্রযাত্রার প্রতিফলন। ইউএস-বাংলার এই প্রচেষ্টা দেশের এভিয়েশন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলেই আশা করা যায়।

লেখক: মো. কামরুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ), ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *