বিশ্বের নানা প্রান্তে ছোট-বড় অসংখ্য দেশ রয়েছে, তবে আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে ছোট দেশগুলো আকর্ষণীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি, ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই দেশগুলো আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও তাদের নিজস্ব পরিচিতি এবং গৌরব রয়েছে। আজকের প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ১০টি দেশের বিষয়ে।
১. ভ্যাটিকান সিটি
আয়তন: 0.49 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: রোমের ভেতরে অবস্থিত
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্বাধীন রাষ্ট্র ভ্যাটিকান সিটি। এটি ক্যাথলিক চার্চের কেন্দ্র এবং পোপের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। ভ্যাটিকান সিটি তার ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
২. মোনাকো
আয়তন: 2.02 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: ফ্রান্সের দক্ষিণে
মোনাকো পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ। এটি তার ক্যাসিনো এবং বিলাসবহুল জীবনধারার জন্য বিখ্যাত। দেশের প্রধান অর্থনীতির উৎস পর্যটন এবং আর্থিক খাত।
৩. নাউরু
আয়তন: 21 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: প্রশান্ত মহাসাগর
নাউরু বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দ্বীপরাষ্ট্র। এটি অতীতে ফসফেট রপ্তানির মাধ্যমে সমৃদ্ধি লাভ করেছিল, তবে বর্তমানে দেশটি অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন।
৪. তুভালু
আয়তন: 26 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: প্রশান্ত মহাসাগর
তুভালু সমুদ্রের উচ্চতার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখে। এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সনাতন জীবনধারার জন্য পরিচিত।
৫. সান মারিনো
আয়তন: 61 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: ইটালির ভেতরে
সান মারিনো পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রজাতন্ত্রগুলোর একটি। দেশটির অর্থনীতি পর্যটন এবং ব্যাংকিং খাতের উপর নির্ভরশীল। এটি তার মধ্যযুগীয় স্থাপত্য ও সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত।
৬. লিখটেনস্টাইন
আয়তন: 160 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে
লিখটেনস্টাইন একটি ধনী দেশ, যা তার উচ্চমানের জীবনযাত্রা এবং কম করের জন্য পরিচিত। এটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও ব্যাংকিং খাতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
৭. মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ
আয়তন: 181 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: মাইক্রোনেশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগর
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পরমাণু পরীক্ষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এটি এখন পর্যটন ও মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল অর্থনীতি।
৮. সেন্ট কিটস ও নেভিস
আয়তন: 261 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: ক্যারিবিয়ান সাগর
এই দ্বীপরাষ্ট্র তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুন্দর সমুদ্র সৈকতের জন্য পরিচিত। পর্যটন দেশের প্রধান অর্থনৈতিক উৎস।
৯. মালদ্বীপ
আয়তন: 300 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: ভারত মহাসাগর
মালদ্বীপ তার অত্যাশ্চর্য রিসোর্ট এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করেছে। পর্যটন শিল্প এখানকার অর্থনীতির মেরুদণ্ড।
১০. মাল্টা
আয়তন: 316 বর্গকিলোমিটার
অবস্থান: ভূমধ্যসাগর
মাল্টা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এটি ভূমধ্যসাগরের একটি কৌশলগত স্থানে অবস্থিত এবং বিভিন্ন সভ্যতার মিলনস্থল হিসেবে কাজ করেছে।
এই দেশগুলো আয়তনে ছোট হলেও তাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অমূল্য। আয়তন দিয়ে কোনো দেশের সামগ্রিক অবদানকে মাপা যায় না। প্রত্যেকটি দেশই তার অনন্য বৈশিষ্ট্য ও পরিচয়ের কারণে বিশ্ব মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।