সোনা বহু শতাব্দী ধরে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান এবং নির্ভরযোগ্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এটি শুধু অলংকারের জন্যই জনপ্রিয় নয়, বরং একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। সোনার মূল্য বাড়ার প্রবণতা এবং এর স্থিতিশীলতা একে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কিন্তু সোনা কেনা কি গয়না ছাড়াও বিনিয়োগ হিসেবে লাভজনক? চলুন জেনে নিই সোনা সম্পদ হিসেবে কতটা কার্যকর।
সোনার মূল্য বৃদ্ধি
সোনার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদে মূল্য হারায় না। বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, এবং অর্থনৈতিক মন্দার সময় সোনার দাম বৃদ্ধি পায়। সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে বিনিয়োগকারীরা সোনাকে এক ধরনের “সেফ হেভেন” বিনিয়োগ বলে মনে করেন।
ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ
অনেক বিনিয়োগ সম্পদের মতো সোনায় বাজারের ওঠানামা থাকে না। শেয়ার বাজার, মুদ্রা বা আবাসন খাতের মতো ক্ষেত্রগুলোতে বড়ো ঝুঁকি থেকে গেলেও, সোনা তুলনামূলকভাবে ঝুঁকিমুক্ত। অস্থির বাজারে সোনার স্থিতিশীলতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা এনে দেয়।
মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা
মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেলে মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়, কিন্তু সোনার দাম তখন বৃদ্ধি পায়। ফলে, সোনা কিনে রাখলে আপনার সম্পদ সুরক্ষিত থাকে। এটি অর্থনৈতিক মন্দার সময়ও বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
গয়না ছাড়াও সোনা কেনা
সাধারণত আমরা সোনার গয়না কিনে থাকি, কিন্তু বিনিয়োগের জন্য সোনার বারের দিকে নজর দেওয়া উচিত। সোনার বার বা কয়েন সরাসরি বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত। এগুলোতে মজুরি বা তৈরি খরচ থাকে না, যা গয়নার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ফলে বার বা কয়েন আকারে সোনা কিনে রাখা দীর্ঘমেয়াদে বেশি লাভজনক হতে পারে।
সোনার কিছু সীমাবদ্ধতা
সোনা সম্পদ হিসেবে বেশিরভাগ দিক দিয়ে ইতিবাচক হলেও, এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। সোনার বাজারও কখনো কখনো দাম কমে যেতে পারে। এছাড়া, সোনার সঞ্চয় করতে হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়, যা অনেকের জন্য বাড়তি খরচের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সোনা বিক্রি করার সময় নগদায়ন প্রক্রিয়াও কিছুটা সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
সোনা শুধু অলংকার হিসেবেই নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সম্পদ হিসেবে চমৎকার। গয়না ছাড়াও বার, কয়েন কিংবা গোল্ড বন্ডের মাধ্যমে সোনা কিনে রাখা একটি ভালো বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।