পাঁচটি অশ্লীল সিনেমা, যা না দেখাই ভালো!

বর্তমান যুগে সিনেমা বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হলেও কিছু চলচ্চিত্র এমন থাকে যা অশ্লীলতার কারণে দর্শকদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য এসব সিনেমা মানসিক ও সামাজিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ ধরনের সিনেমাগুলো শুধু বিনোদনের বদলে অশ্লীলতা, অমার্জিত ভাষা, এবং অনৈতিক আচরণ প্রচার করে, যা সমাজের সুস্থ সংস্কৃতিকে নষ্ট করে।

এ প্রতিবেদনে এমন পাঁচটি সিনেমা তুলে ধরা হলো, যা অশ্লীলতার কারণে দেখা এড়িয়ে চলা উচিত।

১. “ফিফটি শেডস অফ গ্রে” (Fifty Shades of Grey)

রেটিং: IMDb-তে 4.2/10।
ভাষা: ইংরেজি
মুক্তির সাল: ২০১৫

রিভিউ: এই ছবিটি যৌন সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে নির্মিত, যেখানে নানা ধরনের অসুস্থ ও বিকৃত যৌনাচার প্রদর্শিত হয়। এতে প্রেমের একটি গভীর সম্পর্কের পরিবর্তে শরীরকেন্দ্রিক অসুস্থ মানসিকতার প্রকাশ পাওয়া যায়। ছবিটির অশ্লীলতা ও বিতর্কিত বিষয়বস্তু বহুবার সমালোচিত হয়েছে।

কেন অশ্লীল: ছবিটিতে প্রেমের একটি সুস্থ সম্পর্কের বদলে বিকৃত যৌন আচরণ প্রদর্শিত হয়েছে, যা সামাজিক মূল্যবোধের বিপরীত।

২. “ব্লু ইজ দ্য ওয়ার্মেস্ট কালার” (Blue is the Warmest Color)

রেটিং: IMDb-তে 7.7/10।
ভাষা: ফরাসি
মুক্তির সাল: ২০১৩

রিভিউ: সমকামিতা নিয়ে তৈরি এই ছবিতে যৌনতার ঘনিষ্ঠ দৃশ্যগুলো অত্যন্ত দীর্ঘ ও অশ্লীলভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। ছবিটি আদর্শ প্রেমের চেয়ে শারীরিক সম্পর্কের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়, যা অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অনুচিত ও ক্ষতিকর।

কেন অশ্লীল: ছবিটির যৌন দৃশ্যগুলো বিশেষত যুবকদের জন্য মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিকর এবং অপ্রয়োজনীয় দৃশ্যগুলো কাহিনির মূল প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

৩. “ন্যাইন সঙস” (9 Songs)

রেটিং: IMDb-তে 4.8/10।
ভাষা: ইংরেজি
মুক্তির সাল: ২০০৪

রিভিউ: বাস্তবসম্মত এবং খোলামেলা যৌন দৃশ্যের জন্য খ্যাত এই সিনেমাটি মূলত একটি প্রেমের গল্প হলেও, যৌনতার অপ্রয়োজনীয় প্রদর্শনী ছবিটিকে অশ্লীলতার মধ্যে ফেলে। ছবিটির বিভিন্ন দৃশ্য শিশু এবং কিশোরদের জন্য মোটেও উপযুক্ত নয়।

কেন অশ্লীল: যৌনতা কেন্দ্রিক দৃশ্যগুলো বাস্তবসম্মত হলেও ছবির মূল কাহিনির ওপর অশ্লীলতার প্রাধান্য বেশি।

৪. “ক্যালিগুলা” (Caligula)

রেটিং: IMDb-তে 5.3/10।
ভাষা: ইংরেজি
মুক্তির সাল: ১৯৭৯

রিভিউ: রোমান সাম্রাজ্যের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই সিনেমাটি ইতিহাসের ছায়া নিয়ে চললেও এর মধ্যে অশ্লীলতা ও বিকৃত যৌনতা ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। এতে হিংস্র যৌনাচার, নগ্নতা, এবং সহিংসতা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে দেখানো হয়েছে, যা সিনেমাটিকে বিতর্কিত করেছে।

কেন অশ্লীল: ছবিটিতে অশ্লীল ও সহিংস যৌনতার অবাধ প্রদর্শনী রয়েছে, যা একে একটি বিতর্কিত এবং অশ্লীল চলচ্চিত্রে পরিণত করেছে।

৫. “লাভ” (Love)

রেটিং: IMDb-তে 6.0/10।
ভাষা: ফরাসি, ইংরেজি
মুক্তির সাল: ২০১৫

রিভিউ: গ্যাসপার নোয়ের পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে প্রেম এবং যৌনতার মধ্যে কোনো প্রাকৃতিক ভারসাম্য নেই। বরং যৌন দৃশ্যগুলোর অতি প্রদর্শন অশ্লীলতা তৈরি করেছে। গল্পের পাশাপাশি যৌনতাকেন্দ্রিক অপ্রয়োজনীয় দৃশ্যগুলো ছবিটির মূল কাহিনির গুরুত্ব নষ্ট করেছে।

কেন অশ্লীল: যৌনতাকে অতিরিক্তভাবে এবং সরাসরি প্রদর্শিত করা হয়েছে, যা অশ্লীলতার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে এবং কাহিনির মূল বক্তব্যকে ম্লান করেছে।

কেন এই সিনেমাগুলো থেকে বিরত থাকা উচিত?

মৌলিক মূল্যবোধের অবক্ষয়: এই সিনেমাগুলো অশ্লীলতা ও বিকৃত যৌনাচার প্রচার করে, যা সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

মনোযোগের বিভ্রান্তি: সিনেমার মূল উদ্দেশ্য বিনোদন হলেও এই ধরনের চলচ্চিত্র কেবল শারীরিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়ে সৃজনশীলতাকে নষ্ট করে।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: অশ্লীল সিনেমা মানুষের মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।

পরিবার ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর: এই সিনেমাগুলো দেখে অনৈতিক ও অশ্লীল আচরণের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পরিবার ও সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সমাজে অশ্লীলতার প্রসার: সিনেমা একটি শক্তিশালী মাধ্যম। যদি এতে সুস্থ, সৃজনশীল গল্পের পরিবর্তে অশ্লীলতা বেশি প্রদর্শিত হয়, তবে সমাজে এর প্রসার ঘটতে পারে।

অশ্লীল সিনেমাগুলো দেখলে ব্যক্তি ও সমাজের উপর নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তাই আমরা সকলেই সচেতন থাকতে পারি এবং এমন সিনেমাগুলি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারি যা আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং সুস্থ বিনোদনের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিনোদনের জন্য সুস্থ এবং সৃজনশীল সিনেমা বেছে নেওয়াই উত্তম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *