হাত ও পায়ের নখের কোনা দেবে যায় কেন, কী করবেন?

নখের কোনা মাংসে বা ত্বকের ভেতরে দেবে যাওয়ার ঘটনা অনেকের জন্যই প্রচণ্ড ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে পায়ের বুড়ো আঙুলের নখে এটি বেশি ঘটে। এটি এক ধরনের অস্বস্তিকর অবস্থা, যার ফলে নখের প্রান্ত লাল হয়ে ফুলে যায় এবং কখনো সংক্রমণ হলে পুঁজও হতে পারে। যদি সময়মতো সঠিক যত্ন না নেওয়া হয়, তবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই সমস্যাটি কেন হয় এবং কীভাবে এটি প্রতিরোধ করা যায়, তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নখের কোনা দেবে যাওয়ার কারণ:

আঁটসাঁট জুতা পরা: অতিরিক্ত আঁটসাঁট বা ছোট মাপের জুতা পায়ে চাপ সৃষ্টি করে, যা নখের প্রান্তকে মাংসে ঠেলে ঢুকিয়ে দেয়। এই কারণে পায়ের নখে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

ভুলভাবে নখ কাটা: যদি খুব গভীর করে নখ কাটা হয় বা প্রান্তগুলো গোল করে কেটে ফেলা হয়, তাহলে নখের প্রান্ত মাংসে ঢোকার প্রবণতা বেড়ে যায়।

আঘাত ও সংক্রমণ: নখের ওপর আঘাত লাগলে বা নখের তলায় ব্যাকটেরিয়া ঢুকে সংক্রমণ হলে এটি আরও খারাপ হতে পারে। এমনকি আঘাতের কারণে নখ ভেঙে গিয়ে ত্বকের ভেতরে ঢুকে যেতে পারে।

খোঁচাখুঁচি করা: যারা নখের কোনায় খোঁচাখুঁচি করেন বা প্রান্তগুলো বারবার স্পর্শ করেন, তাদের মধ্যে এই সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

রক্তসঞ্চালনের সমস্যা: ডায়াবেটিস বা পায়ে রক্ত চলাচলের সমস্যা থাকলে এ ধরনের প্রদাহের ঝুঁকি বাড়ে। এতে পায়ের নখে এই সমস্যা ঘন ঘন দেখা দিতে পারে।

অনিয়ন্ত্রিত গোসলের অভ্যাস: অনিয়মিত ও অপরিচ্ছন্ন নখের যত্নও এই সমস্যার অন্যতম কারণ হতে পারে, যা পায়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সৃষ্টি করে।

প্রতিরোধ করবেন যেভাবে:

সঠিক মাপের জুতা পরুন: জুতার মাপ সঠিক হলে পায়ের নখে চাপ পড়বে না এবং নখ মাংসে ঢুকবে না। তাই আরামদায়ক ও প্রশস্ত জুতা পরা জরুরি।

নখ সঠিকভাবে কাটুন: নখ কাটা উচিত সোজা রেখায়, যাতে নখের কোনা খুব বেশি ছোট না হয়। এভাবে নখ কাটা হলে নখের প্রান্ত মাংসে ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন: নখের প্রদাহ এবং ব্যথা কমানোর জন্য লবণ মিশ্রিত গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা একটি ভালো উপায়।

অ্যান্টিসেপ্টিক ব্যবহার: নখের কোনায় প্রদাহ দেখা দিলে অ্যান্টিসেপ্টিক ব্যবহার করে সংক্রমণ রোধ করা যেতে পারে।

ডাক্তারের পরামর্শ নিন: যদি সমস্যাটি বড় হয় বা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, তবে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কখনও কখনও নখের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে।

নিয়মিত নখের যত্ন নিন: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিয়মিত নখের যত্ন নিলে অনেক সমস্যাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

রঙের মিশ্রণ ক্ষতিকারক:

অনেক সময় নখের সৌন্দর্য বাড়াতে বিভিন্ন রঙের নেইল পলিশ ব্যবহার করা হয়। তবে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণ নখের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। দীর্ঘদিন নেইল পলিশ ব্যবহার করার ফলে নখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে এবং নখ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাই নখের সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি।

নখের কোনা মাংসে ঢুকে যাওয়ার সমস্যা একটি সাধারণ ঘটনা হলেও, সঠিক পরিচর্যা না করলে এটি বেশ ব্যথাদায়ক হতে পারে। তাই নিয়মিত পায়ের যত্ন, সঠিক জুতা পরা এবং নিয়মমাফিক নখ কেটে এই সমস্যাটি প্রতিরোধ করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *