শিশুর হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ প্রতিরোধে কী করবেন?

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (এইচএফএমডি) একটি ভাইরাল সংক্রমণ, যা সাধারণত ৫ বছরের নিচের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই রোগটি সাধারণত কক্সাকি ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে এবং এতে শিশুদের হাতে, পায়ে এবং মুখে ফুসকুড়ি, ত্বকে জ্বালা এবং উচ্চ তাপমাত্রা দেখা দেয়। এই রোগের প্রতিরোধে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। নিচে শিশুদের এই রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো।

১. হাইজিন রক্ষা করা
শিশুর হাত নিয়মিত সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধোয়া উচিত, বিশেষ করে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর এবং বাইরে খেলার পর। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে সাবান এবং জল সেরা বিকল্প।

২. সঠিক খাদ্য গ্রহণ
শিশুকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে যা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। তাজা ফল, সবজি, দুধ এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করবে।

৩. ফুটবল, গেমস ও শারীরিক কার্যকলাপের সময় সতর্কতা
বাড়ির বাইরে খেলার সময় শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। তাই খেলতে যাওয়ার আগে এবং পরে হাত ভালোভাবে ধোয়ার কথা বলুন। এবং শিশুরা যদি অসুস্থ বোধ করে, তবে তাদেরকে অন্য শিশুদের থেকে দূরে রাখুন।

৪. ভ্যাকসিনেশন
বর্তমানে এইচএফএমডি-এর জন্য কোন নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন নেই, তবে অন্যান্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে শিশুর ভ্যাকসিনেশন নিশ্চিত করতে হবে। এর ফলে শিশুর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

৫. শিশুর ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ভাগ না করা
শিশুর মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে তাদের খেলনা, খাবার এবং পানির বোতল ভাগ করতে নিরুৎসাহিত করুন। শিশুদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ব্যবহার নিশ্চিত করুন।

৬. পরিষ্কার ও স্যানিটারি পরিবেশ রাখা
বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। শিশুর খেলনা, জামাকাপড় ও অন্যান্য ব্যবহৃত জিনিসগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করুন। বিশেষ করে তাদের হাতের কাছে থাকা সবকিছুর স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

৭. লক্ষণ ও সংক্রমণের প্রতি নজর রাখা
শিশুর শরীরে এইচএফএমডি-এর লক্ষণ যেমন জ্বর, মুখে ক্ষত, হাত ও পায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেয়া হলে রোগটি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

৮. আত্মসন্তুষ্টি ও চাপ মুক্ত পরিবেশ তৈরি করা
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ। চাপ মুক্ত এবং সুখী পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে শিশুরা সুস্থ ও ভালো থাকে। মানসিক চাপ কমলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ একটি সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণ হলেও যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে এটির সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে শিশুরা এই রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকবে। মা-বাবাদের সচেতনতা এবং সতর্কতা রোগটি প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *