শীত এলে অনেকেই লক্ষ্য করেন যে, তারা অন্যদের তুলনায় বেশি ঠাণ্ডা অনুভব করেন। একদিকে সবাই স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আরাম বোধ করলেও, কিছু মানুষ শীতল হাওয়ায় কাঁপতে শুরু করেন। এটা কি শুধুই শারীরিক বৈশিষ্ট্য, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে কোনো বিশেষ কারণ?
কেন শীতে বেশি ঠাণ্ডা লাগে?
রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা: শীতকালে শরীরের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যায়, ফলে হাত-পা বেশি ঠাণ্ডা লাগে। যাদের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়।
লোহিত রক্তকণিকার অভাব (এনিমিয়া): রক্তে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন না থাকলে শরীর তাপ ধরে রাখতে পারে না। এটি শীতের সময় অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগার একটি বড় কারণ।
থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি: থাইরয়েড হরমোন শরীরের মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোন কম হলে শরীর যথেষ্ট তাপ উৎপাদন করতে পারে না, ফলে বেশি ঠাণ্ডা লাগে।
শরীরে চর্বির পরিমাণ কম: শরীরের চর্বি একটি প্রাকৃতিক অন্তরক হিসেবে কাজ করে। যারা খুব চিকন বা দেহে চর্বির স্তর কম, তারা সহজেই শীতে কাঁপতে শুরু করেন।
পানি ও পুষ্টির অভাব: শীতকালে পানি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়, কিন্তু হাইড্রেশনের অভাব শরীরকে দুর্বল করে তোলে। এছাড়া প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে বাধা দেয়।
কীভাবে এই সমস্যা সমাধান করবেন?
উষ্ণ পোশাক পরুন: গরম কাপড়ের সাথে বিশেষ করে মাথা, গলা ও হাত-পা ঢেকে রাখুন। মোজা ও গ্লাভস ব্যবহার করুন।
পুষ্টিকর খাবার খান: শীতকালে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান। আদা চা বা গরম পানীয় শরীরকে উষ্ণ রাখতে সহায়ক।
ব্যায়াম করুন: শীতকালে হালকা ব্যায়াম করলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং শরীর গরম থাকে।
থাইরয়েড ও রক্ত পরীক্ষা করুন: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিন। থাইরয়েড বা রক্তস্বল্পতার সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হাইড্রেটেড থাকুন: শীতেও পর্যাপ্ত পানি পান করুন। লেবু, মধু মিশ্রিত গরম পানি খেলে ভালো ফল পাবেন।
শীতে ঠাণ্ডা লাগা স্বাভাবিক, তবে যদি তা অতিরিক্ত হয়, তাহলে তা উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক যত্ন ও সচেতনতার মাধ্যমে শীতে উষ্ণ থাকা সম্ভব। তাই এই শীতে নিজের যত্ন নিন, উষ্ণ থাকুন, সুস্থ থাকুন।