বর্তমান বিশ্বে লিঙ্গ এবং যৌন পরিচয়ের ধারণা ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। লিঙ্গ ও যৌন পরিচয় শুধুমাত্র পুরুষ ও নারীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি অনেক বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। এই প্রতিবেদনে ট্রান্সজেন্ডার, হিজড়া এবং নন-বাইনারি পরিচয়ের সংজ্ঞা এবং এলজিবিটিকিউআইএ+ দিয়ে কী বোঝায়- তা তুলে ধরা হবে।
ট্রান্সজেন্ডার: ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি এমন ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত হয় যাদের জন্মগত লিঙ্গ তাদের পরিচয় বা আত্ম-অনুভূতির সাথে মিলে না। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছে পুরুষ হিসেবে, কিন্তু তাদের নিজস্ব অনুভূতি অনুসারে তারা একজন নারী। ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি তাদের লিঙ্গ পরিচয় অনুসারে জীবন যাপন করতে পারেন এবং অনেকেই হরমোন থেরাপি বা সার্জারি করে নিজের লিঙ্গকে মানানসই করার চেষ্টা করেন।
হিজড়া: হিজড়া বা হিজড়ারা একটি বিশেষ গোষ্ঠী, যারা দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতিতে পরিচিত। তারা সাধারণত পুরুষ হিসেবে জন্ম নেন কিন্তু পুরুষের সামাজিক ভূমিকা পালন করেন না। হিজড়া সমাজে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য আছে এবং অনেক সময় তারা তাদের লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে সমাজের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হিজড়াদের মধ্যে অনেকেই লিঙ্গ পরিবর্তন করে বা একটি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে পরিচিত হন।
নন-বাইনারি: নন-বাইনারি হল এমন একটি লিঙ্গ পরিচয় যা বাইনারি লিঙ্গ (পুরুষ ও নারী) সীমানার বাইরে থাকে। নন-বাইনারি ব্যক্তিরা নিজেদের পুরুষ, নারী, বা উভয়ের মতো অনুভব করতে পারেন, অথবা তারা এই দুটি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা অনুভূতি ধারণ করতে পারেন। নন-বাইনারি লিঙ্গ পরিচয়গুলোর মধ্যে জেন্ডারকুইয়ার, জেন্ডারফ্লুইড, এবং অ্যাজেন্ডার অন্তর্ভুক্ত।
এলজিবিটিকিউআইএ+ দিয়ে কী বোঝায়?
এলজিবিটিকিউআইএ+ হল একটি অঙ্গীকার যা বিভিন্ন লিঙ্গ এবং যৌন পরিচয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। এর প্রতিটি অক্ষর একটি নির্দিষ্ট পরিচয় বোঝায়:
L: লেসবিয়ান (মহিলা যারা মহিলাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়)
G: গে (পুরুষ যারা পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হয়)
B: বাইসেক্সুয়াল (যারা উভয় লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয়)
T: ট্রান্সজেন্ডার (যারা জন্মগত লিঙ্গের বাইরে পরিচয় ধারণ করেন)
Q: কুইয়ার বা কুইয়ার (একটি ছিন্নলিঙ্গ এবং যৌনতা সম্পর্কিত পরিচয়)
I: ইন্টারসেক্স (যারা জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের সাথে হয়)
A: অ্যাসেক্সুয়াল (যারা যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন না) বা আল্লিজেন্ডার (যারা বাইনারি লিঙ্গের বাইরে থাকতে পছন্দ করেন)
+: অন্যান্য পরিচয় এবং লিঙ্গ বৈচিত্র্য অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন নন-বাইনারি, জেন্ডারফ্লুইড, এবং আরও অনেক কিছু।